বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন নিয়ে আলোচনা


খাবার অনুযায়ী ভিটামিন সমূহ

✬ আমিষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি --- শুটকী মাছ।
✬ হাড় ও দাতকে মজবুত করে -- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস।
✬ কচুশাক বিশেষভাবে মূল্যবান --- লৌহ উপাদানের জন্য।
✬ সুষম খাদ্যের উপাদান - ৬ টি।
✬ প্রোটিন বেশি থাকে -- মসুর ডালে।
✬ চা পাতায় থাকে -- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স।
✬ ম্যালিক এসিড -- টমেটোতে পাওয়া যায়।
✬ ক্ষতস্থান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে -- ভিটামিন কে।
✬ খিটামিন সি হলো -- অ্যাসকরবিক এসিড।
✬ তাপে নষ্ট হয় -- ভিটামিন সি।
✬ গলগল্ড রোগ হয় -- আয়োডিন অভাবে।
✬ মানবদেহ গঠনে প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি --- আমিষের।
✬ আয়োডিন বেশি থাকে -- সমুদ্রের মাছে।
✬ কচু খেলে গলা চুলকায়, কারণ কচুতে আছে -- ক্যালসিয়াম অক্সালেট।
✬ রাতকানা রোগ হয় -- ভিটামিন এ এর অভাবে।
✬ মুখে ও জিহবায় ঘা হয় -- ভিটামিন বি₂ এর অভাবে।
✬ পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন -- ভিটামিন বি ও সি।
✬ শিশুদের রিকেটাস রোগ হয় -- ভিটামিন ডি এর অভাবে।
✬ মিষ্টি কুমড়া -- ভিটামিন জাতীয় খাদ্য।
✬ মিষ্টি আলু -- শ্বেতস্বার জাতীয় খাদ্য।
✬ শিমের বিচি -- আমিষ জাতীয় খাদ্য।
✬ দুধে থাকে -- ল্যাকটিক এসিড।
✬ আয়োডিন অভাবে -- গলগন্ড রোগ হয়।
✬ লেবুতে বেশি থেকে -- ভিটামিন সি।
✬ আমলকী, লেবু, পেয়ারা ভিটামিনের উৎস -- ভিটামিন সি।
✬ সর্বাধিক স্নেহ জাতীয় পদার্থ বিদ্যমান -- দুধে।
✬ রক্তশূন্যতা দেখা দেয় -- আয়রনের অভাবে।
✬ দুধের রং সাদা হয় -- প্রোটিনের জন্য।
✬ ভিটামিন সি এর রাসায়নিক নাম -- অ্যাসকরবিক এসিড।
✬ প্রোটিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় -- অ্যামাইনো এসিড।
✬ কচুশাকে বেশি থাকে -- লৌহ।
✬ সুষমখাদ্যে শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যের অনুপাত -- ৪:১:১।
✬ সবুজ তরিতরকারিতে সবচেয়ে বেশি থাকে -- খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন।
✬ সবচেয়ে বেশি পাটাশিয়াম পাওয়া যায় -- ডাবে।
✬ মাড়ি দিয়ে পুজি ও রক্ত পড়ে -- ভিটামিন সি এর অভাবে।
✬ মানবদেহের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন -- আমিষ জাতীয় খাদ্যে।
✬ সূর্য কিরণ হতে পাওয়া যায় -- ভিটামিন ডি।
✬ ডিমের সাদা অংশে যে প্রোটিন থাকে -- অ্যালবুমিন।
✬ আমিষের কাজ -- দেহ কোষ গঠনে সহয়তা করা।
✬ মোটামুটি সম্পূর্ণ বা আদর্শ খাদ্য বলা হয় -- দুধকে।
✬ কোলেস্টরল -- এক ধরণের অসম্পৃক্ত অ্যালকোহল।
✬ হাড় ও দাত তৈরির জন্য প্রয়োজন -- ডি ভিটামিন।
✬ ভিটামিন ডি এর অভাবে -- রিকেটস রোগ।
✬ অস্থির বৃদ্ধির জন্য পোয়োজন -- ক্যালসিয়াম।
✬ মলা মাছে থাকে -- ভিটামিন ডি।
✬ ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরিতে সাহায্য করে -- আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ।
✬ শরীরে শক্তি যোগাতে দরকার -- খাদ্য।
✬ সামুদ্রিক মাছে পাওয়া যায় -- আয়োডিন।
✬ সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল -- পেয়ারা।
✬ ভিটামিন এ সবচেয়ে বেশি -- গাজরে।
✬ আয়োডিন পাওয়া যায় -- শৈবালে।
✬ আমাদের দেশে একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির প্রায় গড় ক্যালরি শক্তির প্রয়োজন -- ২৫০০ ক্যালরি।
✬ ল্যাথারাইজম রোগ -- খেসারি ডাল খেলে।
✬ শরীরের হাড় ও দাতের গঠনের কাজে বেশি প্রয়োজন -- ক্যালসিয়াম।
✬ সহজে সর্দি কাশি হয় -- ভিটামিন সি এর অভাবে।
✬ বিষাক্ত নিকোটিন থাকা -- তামাকে।
নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন সমূহ
অনেক বেশী স্বাস্থ্য সচেতন বর্তমান নারীরা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতেও চেষ্টা করেন সবসময় । তবে কোন খাবারকে আমারা বলব স্বাস্থ্যকর খাবার? যে খাবারে সঠিক পরিমানে ভিটামিন আছে সেটাই হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। সব বয়সের মেয়েদের জন্যই সঠিক মাত্রায় ভিটামিনযুক্ত খাবার অতীব প্রয়োজনীয়। নারীদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনগুলো হল-

১) ভিটামিন এ
কেন দরকার -
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার সাথে সাথেব শরীরের হাড়, চামড়া, দাঁত, নরম টিস্যু তৈরি করে ,ক্রনিক ডিজিস প্রতিরোধ করে, দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
গাজর, মিষ্টি কুমড়া, এপ্রিকট , টমেটো, তরমুজ, পেয়ারা, ব্রোকলি, কালে, পেপে, রেড পিপার, পালং শাক, ডিম, কলিজা, দুধ।

২) ভিটামিন বি ২
রিবোফ্লাবিন নামে পরিচিত ভিটামিন টি মানুষের মানসিক ভাবে সুস্ত থাকার জন্যও দরকার।
কেন দরকার -
শরীরে শক্তি বৃদ্ধির, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা কমিয়ে মানুষকে উৎফুল্ল করে তোলে। পরিপাক তন্ত্র ভাল রাখে, স্নায়ু কর্মক্ষম করে,গলদাহ , মুখের আলসার , শুষ্ক চুল , ত্বকে ভাঁজ পড়া ইত্যাদি সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
মাংস, পনির, দুধ, টক দই, শাক,ডিম, সয়াবিন, নাট ও মাসরুম।

৩) ভিটামিন বি ৬
কেন দরকার -
শরীরে হরমোন উৎপাদন, বিষন্নতা, হৃদরোগ ওস্মৃতিশক্তি কর্মক্ষম রাখা, চিনির মাত্রা সঠিক রাখতে, গর্ভবতী মায়েদের সকাল বেলার দুর্বলতা কাটাতে, রক্ত স্বল্পতা দূর করতে।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
সিরিয়াল, আভাকাডো , কলা, মাংশ, বিন , ওটমিল, বাদাম, বীজ জাতীয় খাবার ও শুকনো ফল।

৪) ভিটামিন বি ৭
কেন দরকার - কোষের বৃদ্ধিতে ও ফ্যাটি এসিডের সংস্লেশন, চুল ও ত্বক সাস্থ্যময় রাখা, হাড়ের বৃদ্ধি ও অস্থি মজ্জা তৈরি করা, শরীরে কোলেস্টরল ঠিক রাখা।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
মাছ, মিষ্টি আলু, গাজর, কলা, হলুদ ফল, ডাল, ডিম এর কুসুম, সয়াবিন, ওটমিল, দুধ, পনির, দই ।

৫) ভিটামিন বি ৯
কেন দরকার -
হৃদরোগ , উচ্চ রক্তচাপ, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, বিসন্নতা, ক্যান্সার এবং স্মৃতিশক্তি লোপ প্রতিরোধ করে, গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
সবুজ সবজি, কমলা, তরমুজ,শস্যদানা, শিম , মটরশুটি এবং ডিম ।

৬) ভিটামিন বি ১২
কেন দরকার -
বিপাক ক্রিয়া ঠিক রাখতে, কোষ এর স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে, প্রোটিন সংশ্লেষণ, স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া এবং রক্তস্বল্পতা রোধ
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
পনির , ডিম , মাছ , মাংস , দুধ , দই ।

৭) ভিটামিন সি
কেন দরকার -
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, টিস্যুর বৃদ্ধি ঘটাতে,ক্যান্সার, হৃদরোগ লাল রক্ত কণিকা গঠনে ।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
ব্রোকলি , আঙ্গুর , কমলালেবু , মরিচ , আলু , স্ট্রবেরি , টমেটো।

৮) ভিটামিন ডি
কেন দরকার -
ক্যালসিয়াম শোষণ ,হাড় শক্তিশালী করা, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর জন্য। অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে আপনার অস্টিওপরোসিস হতে পারে ।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট রোঁদে থাকলেই আপনার শরীর পরিমিত ভিটামিন ডি উৎপাদন করতে পারে। আবার মাছ,দুধ , গরুর কলিজা থেকেও পেতে পারেন।


৯) ভিটামিন ই
কেন দরকার -
চেহারায় বয়সের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করে, হৃদরোগ , ছানি , স্মৃতিশক্তি লোপ প্রতিরোধ করে।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
গম, বাদাম , শাক , ভূট্টা তেল , কড লিভার তেল , মাখন , এবং সূর্যমুখী।

১০) ভিটামিন কে
কেন দরকার -
হাড় শক্ত করতে , রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখতে ও হৃদরোগের ঝুকি কমাতে।
কোন খাবারে আপনি ভিটামিনটি পাবেন-
শস্যদানা,সবুজ সবজি, সয়াবিন তেল ও মাছের তেল।
বিভিন্ন প্রকার শাক:
১. কালো কচু শাক: ২০০০ 
২. হেলেঞ্চা শাক: ১৩৬৭ 
৩. সজিনা পাতা: ১২৫৭ 
৪. পুঁই শাক: ১২৪০ 
৫. লাউ শাক: ১১৯৯ 
৬. ধনিয়া পাতা: ১১৫৩ 
৭. পাট শাক: ১১৫৩ 
৮. লাল শাক: ১০৫৫ 
৯. থানকুনি পাতা: ১০১৭ 
১০. ডাটা শাক: ১০০০ 
১১. পালং শাক: ৯২২ 
১২. মিষ্টি আলু শাক: ৮৬৩ 
১৩. মূলা শাক: ৬৬১ 
১৪. সরিষা শাক: ৪৩৭ 
১৫. মিষ্টি কুমড়া শাক: ৩৭৪ 
১৬. কলমি শাক: ৩৩০ 
১৭. বথুয়া শাক: ২৯০ 
১৮. বাটি শাক: ২৯০ 
১৯. পুদিনা শাক: ২৭০
বিভিন্ন সব্জি:
১. মিষ্টি কুমড়া: ১২০০ 
২. গাজর: ১০০০ 
৩. মিষ্টি আলু: ৩০২ 
৪. সজিনা: ১২৫
বিভিন্ন প্রকার ফল:
১. পাকা আম: ১৩৮৩ 
২. পাকা কাঁঠাল: ৭৮৩ 
৩. পাকা পেঁপে: ১২৫
প্রাণীজ খাবার:
১. খাসির কলিজা: ১৪,১৪০ 
২. মলা ও ঢেলা মাছ: ১৯৬০ এবং ৯৩৭ 
৩. হাঁসের ডিম: ৩৬৯ 
৪. মুরগীর ডিম: ২৭০ 
৫. মুরগীর মাংস: ২৪৩

শিশুকে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ান যখন:

১. শিশু একটানা দুই সপ্তাহ ডায়রিয়ায় ভুগলে 
২. হামের পর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে 
৩. মারাত্মক অপুষ্টি দেখা দিলে
প্রসূতি মা'কে ১-১৪ দিনের মধ্যে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ান।
প্রতিদিন ভিটামিন 'এ' গ্রহণের প্রয়োজনীয় পরিমাণ: 
১. শিশু (৬-৫৯ মাস): ৩৫০-৪০০ আর.ই 
২. গর্ভবতী মহিলা: ৪০০ আর.ই 
৩. প্রসূতি মা: ৮৫০ আর.ই
সূত্র: জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রম
কোন ভিটামিনের অভাবে কী রোগ হয়?
ভিটামিনের অভাব বিভিন্ন ধরনের রোগ তৈরি করতে পারে। ছবি : টাইমস অব ইন্ডিয়া ভিটামিন হলো খাদ্যে জরুরি কিছু ছোট জৈব অণু। ভিটামিনকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। যেমন : বি২, ফলিক এসিড, বি১২, ভিটামিন সি ইত্যাদি) এবং চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ( ভিটামিন ডি, এ, ই কে)। ভিটামিনের অভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়।
অবসন্নতা, ছোট শ্বাস, ক্লান্ত ত্বক, মাথা ঘোরা, অনিয়ন্ত্রিত হার্টবিট- এগুলো ভিটামিনের অভাবের লক্ষণ। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে ভিটামিনের অভাবে পাঁচ ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যার কথা।
১. সংকেত
গাল, হাত প্রভৃতি জায়গায় লাল অথবা সাদা ব্রণ হওয়া।
অভাব
এটি ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি এর অভাব নির্দেশ করে।

যেভাবে দূর করবেন

সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-এর প্রাকৃতিক উৎস। ভিটামিন ডি পেতে সূর্যের আলো লাগানো চাই শরীরে, তবে বুঝেশুনে। সাধারণত বলা হয়, সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে আলো বেশি ভালো। এ ছাড়া মাছ, টুনা, সার্ডিন, ডিম, দুধ, মাখন, সবুজ পাতাজাতীয় সবজি এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া খাদ্যতালিকায় কাঠবাদাম, ওয়াল নাট ইত্যাদিও যোগ করতে পারেন। আর ভিটামিন এ পেতে পেপে, রঙিন সবজি, গাজর, মিষ্টি আলু, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।
২. সংকেত
হাত, পা অথবা দেহের অন্য কোনো জায়গায় অসাড়তা।
অভাব 
এই ধরনের সংকেত ভিটামিন বি-এর অভাব নির্দেশ করে। যেমন বি৬ এবং বি১২। এটি পেরিফেরাল স্নায়ুর সমস্যা নির্দেশ করে, যা ত্বকে এসে শেষ হয়। এ ছাড়া উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, এনিমিয়া, অবসন্নতা এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতাও ভিটামিন বি-এর অভাবে দেখা দিতে পারে।

কীভাবে দূর করবেন
খাদ্যতালিকায় ভিটামিন বি-এর পরিমাণ বেশি রাখতে হবে। বাদামি ভাত, বাদাম, ডিম, মুরগি, খাসির মাংস, কলা, ব্রকলি, বাঁধাকপি এবং সবুজ পাতাজাতীয় সবজি ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।
৩. সংকেত
মুখের কোনো খাঁজ
অভাব 
জিংক,আয়রন এবং ভিটামিন বি, যেমন, নায়াসিন (বি৩), রিবোফ্লেভিন (বি২)।

দূর করবেন যেভাবে
টুনামাছ, ডিম, মুরগি, টমেটো, পিনাট, ব্রকলি ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। পাশাপাশি দই, পনির, ঘি ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
৪. সংকেত
পেশি খিঁচুনির কারণে টনটন করে ব্যথা, বিশেষ করে পায়ের বিভিন্ন অংশে।
অভাব 
ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। যদি এই সমস্যা প্রায়ই হতে থাকে তবে বুঝতে হবে যে আপনার খাবারে এগুলোর অভাব রয়েছে।

দূর করবেন যেভাবে
পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাবেন। কলা, বাদাম, নারকেল পানি ইত্যাদি। ম্যাগনেসিয়ামের জন্য গাঢ় সবুজজাতীয় খাবার খেতে পারেন। গাজর, বাদামি ভাত, কাজুবাদাম থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে।
৫. সংকেত
মুখে লাল র‍্যাশ এবং চুল বেশি পড়া।
অভাব 
বায়োটিন (বি৭) চুলের ভিটামিন হিসেবে পরিচিত। যখন আপনার শরীর চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন খায় (যেমন এ ডি ই কে) তখন বেশি ভিটামিন বি সঞ্চয় হয় না।
যেভাবে দূর করবেন
অ্যাভাকাডো, মাশরুম, ফুলকপি, সয়াবিন, বাদাম ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।

ভিটামিন এ:
অভাব জনিত রোগ: রাতকানা, উদরাময়, সুতিকা, সর্দিকাশি, মূত্র পাথরি, কানের রোগ, চোখের রোগ হয়।
যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায়: পালংশাক, বিট, গাজর, মটরশুটি, কপি, পেঁপে, লাউ, পাকা আম, দুধ, মাখন, মাছের তৈল, খাসির কলিজা।
ভিটামিন বি:
অভাব জনিত রোগ: বেরিবেরি, নার্ভের রোগ, হৃদপিন্ড সংক্রান্ত রোগ হয়।
যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায়: শস্যদানা, দুধ, সবুজ শাকসবজি।
ভিটামিন সি:
অভাব জনিত রোগ: ওজন কমে, শিশুর হাড় ও দাঁতের ক্ষয় হয়।
যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায়: কমলালেবু, লেবু, মাল্টা, আনারস, পেয়ারা, আমলকি, তরমুজ, আখ, শশা, পেঁপে, আঙুর, শাকসবজি, অঙ্কুরিত ছোলা, দুধ, দৈই ইত্যাদি।
ভিটামিন ডি:
অভাব জনিত রোগ: কুঁজো হওয়া, শিশুদের রিকেট রোগ, দাঁতের ক্ষয়।
যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায়: মাচের ডিম, খাসির মাংস, ডিমের কুসুম, দুধ, মাখন, ছানা প্রভৃতিতে এই ভিটামিন আছে।
ভিটামিন ই:
অভাব জনিত রোগ: গর্ভস' সন্তানের মৃত্যু হয়। গর্ভপাত ও গর্ভস্রাব হয়, পায়ে যন্ত্রণা, হৃদপিন্ড ও ধমনীর কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।
যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায়: আঁকাড়া চাল, যাতা ভাঙা আটা, নারিকেল, কলা, দুধ, সয়াবিন, মাংস, ডিম, সবুজ শাক সবজি।
ভিটামিন এইচ:
অভাব জনিত রোগ: দাঁত ও অসি' গঠন হয় না, ত্বকের স্বাস'্য নষ্ট হয়।
যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায়: শাকসবজি, দুধ, মাখন, সামুদ্রিক মাছে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।
ভিটামিন কে:
অভাব জনিত রোগ: জন্ডিস ও যকৃতের রোগ হয়।
যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায়: বাধাকপি, টমেটো, সয়াবিন ও সবুজ শাকসবজি।
খাদ্য ও পুষ্টি
খাদ্য ও পুষ্টি কনটেন্টটিতে খাদ্যের কাজ, খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ, খাদ্য উপাদানের শ্রেণী বিভাগ, খাদ্য উপাদানের কাজ, উৎস ও মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ, সুষম খাদ্য, পুষ্টি সর্ম্পকে বর্ণনা করা হয়েছে।
খাদ্য ছাড়া আমাদের জীবন ধারণ সম্ভব নয়। দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং চলাফেরা করার জন্য সবল, রোগমুক্ত ও সুস্থ শরীর প্রয়োজন। সুস্থ শরীর বজায় রাখার জন্য আমরা যা কিছু খেয়ে থাকি তা-ই খাদ্য।

খাদ্যের কাজ
শরীর গঠন ও বৃদ্ধিসাধন এবং ক্ষয়পূরণ
শরীরে তাপশক্তি ও কর্মক্ষমতা যোগানো
শরীর রোগমুক্ত রাখা
অসুস্থ শরীরকে আরোগ্য লাভে সহায়তা করা
কোন কোন খাবার খেলে সহজেই শক্তি বৃদ্ধি হয় তা জানা থাকলে কার্যক্ষমতা নিয়ে চিন্তা থাকে না। চলুন দেখা যাক কোন খাবারে কেমন গুণাগুণ।
ডিমের কুসুম শরীরের জন্য খুব উপকারী। এতে প্রচুর ভিটামিন বি থাকে, যা শরীরে শক্তি সরবরাহে সাহায্য করে। ডিমের মধ্যে বিদ্যমান ভিটামিন ডি হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রোটিনের ব্যাপক সরবরাহ করে ডিমের কুসুম।
পানির বিকল্প কিছু নেই— এটা আমরা সবাই জানি। তবে পানি কী জন্য এত প্রয়োজনীয় তা এর গুণাগুণ জানলেই বোঝা যায়। শরীরে শক্তি জোগাতে এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়া শরীরের অপ্রয়োজনীয় উপাদান পানির কারণে মূত্র আর ঘামের সঙ্গে বের হয়ে যায়। এতে শরীর অনেক বেশি সতেজ থাকে।
চায়ের থেকে কফি অনেকের প্রিয়। এতে অনেক বেশি ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন ডি থাকায় ব্যায়াম বা শারীরিক কসরতজনিত যেকোনো কাজে অনেক বেশি শক্তি জোগায়।
সয়াবিনে ভিটামিন বি, বি কমপ্লেক্স থাকে। এছাড়া কপার ও ফসফরাস থাকার ফলে খাবারকে ভেঙে তার পুষ্টি গুণাগুণ শরীরে সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
বাদাম আর শুকনো ফলের মিশ্রণ শরীরে ব্যাপক প্রোটিন সরবরাহ করে। এর মধ্যে থাকা আঁশ শরীরে গ্লুকোজ সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া প্রোটিন পেশিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
কুমড়ার বীজ খাবার হিসেবে অনেকের প্রিয়। অনেকে ভেজে খেতে পছন্দ করেন কুমড়ার বীজ। এ বীজে প্রোটিন, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক আছে। এ উপাদানগুলো শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ব্যায়াম বা শারীরিক যেকোনো কাজ করার সময় যে শক্তি প্রয়োজন হয়, কুমড়ার বীজের মধ্যে তার সব গুণাগুণ পাওয়া যায়।

ভিটামিন-এ

##কাজ
চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখে ত্বকের কোষকে ভালো রাখে ফলে ত্বক মসৃণ থাকে শরীর গঠন এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে হাঁড় ও দাঁত তৈরীতে সহায়তা করে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রজনন ক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখতে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-ফিস লিভার ওয়েল, মাছের তেল, কলিজা, মাখন, ডিমের কুসুম, কিডনি, চর্বি উদ্ভিজ্য উৎস যেমন-রঙিন শাকসবজি,মিষ্টি কুমড়া, গাজর,আম,কড লিভার অয়েল,পেঁপে, মটরশুঁটি, ফল এবং ভুট্টা ও মিষ্টি আলু
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
প্রায় ৫০০০ আই ইউ ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
প্রায় ৬০০০ আই ইউ ( গর্ভবতীর জন্য )
প্রায় ৮০০০ আই ইউ ( প্রসূতির জন্য )
প্রায় ২০০০-৪৫০০ আই ইউ ( ১-১২ বছর বয়স পর্যন্ত )
আই ইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট)
ভিটামিন-বি

##কাজ
শরীরে শর্করা জাতীয় খাদ্যের বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে শক্তি উৎপাদন করে চর্বি ও আমিষ থেকে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-চর্বি বিহীন মাংস, কলিজা, ডিম, দুধ, মাছ উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-ঢেঁকি ছাঁটা সিদ্ধ চাল, গম, যব, ইস্ট, মটরশুঁটি ইত্যাদি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
১.৪ মিলিগ্রাম ( পুরুষের জন্য )
১.০ মিলিগ্রাম ( মহিলার জন্য )
১.১ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
১.৪ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )

নায়াসিন
##কাজ
শর্করা বিপাকে সাহায্য করে শর্করা ও আমিষ থেকে দেহের চর্বি উৎপাদনে সাহায্য করে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাংস, কলিজা উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-গম, ডাল, বাদাম, তেল বীজ, ছোলা ও শাক-সবজি
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
১৮.২ মিলিগ্রাম ( পুরুষের জন্য )
১৩.২ মিলিগ্রাম ( মহিলার জন্য )
১৫.১ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
১৮.১ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )

ভিটামিন-বি১২

##কাজ
কো-এনজাইম হিসেবে দেহে কাজ করে রক্তের লোহিত কণিকার আকার স্বাভাবিক রাখে
উৎস (আহারোপযোগী)
প্রাণিজ উৎস যেমন-কলিজা, মগজ, হৃৎপিন্ড, কিডনি, মাংস, মাছ, ডিম, দুধ, দুগ্ধজাত খাদ্য, ডিমের কুসুম ও গরুর কলিজা (উদ্ভিজ্জ খাদ্যে ভিটামিন-বি১২ নেই)
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
১.০ মাইক্রোগ্রাম (শিশুর জন্য)
২.০ মাইক্রোগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য)
৩.০ মাইক্রোগ্রাম (গর্ভবতীর জন্য)
২.৫ মাইক্রোগ্রাম (প্রসূতির জন্য)
ভিটামিন-সি

##কাজ
কোলাজেন নামক আমিষ তৈরী এবং রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্য করে। চর্বি ও আমিষ বিপাকে সাহায্য করে। রক্ত তৈরী করার জন্য লৌহ এবং তাম্রকে ব্যবহৃত করতে সাহায্য করে। চামড়া মসৃণ এবং উজ্জল রাখে। দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে। ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করে ও সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করে। 

উৎস (আহারোপযোগী) ।
টক জাতীয় ফল যেমন - আমলকি, পেঁয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, লেবু, কামরাঙ্গা, কুল, আনারস। এছাড়া কাঁচামরিচ, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, সজনে পাতা,কমলা, স্ট্রবেরি, টমেটো, ব্রকলি, ফুলকপি, কিউই ফল, গাজর, পেঁপে, আঙুর, আম, জাম, আলু, তরমুজ, কলা, পেঁয়াজ, চেরিফল, কিশমিশ, লেটুসপাতা, বেগুন, ডুমুর, মূলাশাক ইত্যাদি কাঁচা খেলেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। 

মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
২০ মিলিগ্রাম ( শিশুর জন্য ) 
৩০ মিলিগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য ) 
৫০ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য ) 
৫০ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )
ভিটামিন-ডি
##কাজ
শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বিপাকে সাহায্য করে। হাঁড় ও দাঁত গঠনে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস কাজে লাগাতে সাহায্য করে।
উৎস (আহারোপযোগী) ।
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছের তেল, ফিস লিভার ওয়েল, মাখন, ডিমের কুসুম, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার। প্রাকৃতিক উৎস যেমন-সূর্যের আলো।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ
২.৫ মাইক্রোগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য )।
১০ মাইক্রোগ্রাম ( গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুর জন্য )।
(উদ্ভিজ্জ খাদ্যে ভিটামিন-ডি নেই)।
ভিটামিন-ই
##কাজ
এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে ভিটামিন-এ, ক্যারোটিন এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডকে জারিত হয়ে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে।
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করাসহ বন্ধ্যাত্ব নিবারণে সহায়তা করে।
উৎস (আহারোপযোগী) ।
প্রাণিজ উৎস যেমন-কডলিভার ওয়েল।
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন- বাদাম,গম, যব, সূর্যমুখী তেল, সয়াবিন তেল, পামতেল।, শস্যদানা, সবুজ শাকসবজি, ডিমের কুসুম, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়ার বীজ।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ ।
প্রায় ৫-১০ মিলিগ্রাম।
ভিটামিন কে
ভিটামিন কে কোথাও কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে।
কোন কোন খাবারে আছে 
সবুজ শাকসবজি, ডেইরি প্রোডাক্ট, ব্রকলি, সয়াবিন তেল, পুঁইশাক, বাঁধাকপি, পার্সলে, লেটুসপাতা, সরিষা শাক।
ত্বকের জন্য যে খাবারগুলো ভালো
ত্বক সুস্থ, সতেজ রাখতে আপনি কী খাচ্ছেন আর কী খাচ্ছেন না, তা খুবই জরুরি। আপনার খাবারে জলীয় অংশের পরিমাণ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং তৈলাক্ততা এসব সরাসরি আপনার ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই নানা রকম স্কিন ট্রিটমেন্ট, স্পা-ফেসিয়াল এবং প্রসাধনচর্চার আগে জেনে নিন ত্বকের জন্য কোনটি ভালো আর কোনটি খারাপ।
ত্বকের জন্য ভালো
ত্বকের ভালো, ত্বকের মন্দত্বক সুস্থ, সতেজ ও চিরতরুণ রাখতে আপনি যা খাবেন তাতে প্রচুর পানি থাকা উচিত। সে সঙ্গে চাই নানা ধরনের ভিটামিন।
টমেটো
টমেটোতে যে লাইকোপিন নামে উপাদান আছে, তা ত্বককে উজ্জ্বল রাখে। আর ভিটামিন সি ত্বকের রুক্ষতা দূর করে। গবেষকেরা একমত যে প্রচুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় নিয়মিত প্রতিদিন টমেটো আপনার ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেবে না।
শসা
মুখ-চোখের ওপর শসার ফালি রাখা পারলারে স্পা বা ফেসিয়ালের নৈমিত্তিক বিষয়। কিন্তু জানেন কি যে শসা রোজ খেলে আপনার ত্বক যথেষ্ট আর্দ্র হয়ে ওঠে এবং ত্বক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে? শসায় সিলিকা থাকায় এটি উজ্জ্বল ও পরিষ্কার ত্বক বজায় রাখতে সাহায্য করে, ত্বকের কোলাজেনকে রক্ষা করে এবং টান টান রাখে। সবুজ খোসাসহ শসা এতে আরও বেশি সাহায্য করবে।
লেবু
প্রতিদিন এক গ্লাস পানিতে একটা লেবু চিপে সেই পানি পান করলে যকৃত পরিষ্কার হয়। আর ত্বক ভালো রাখতে যকৃতের ভূমিকা অপরিসীম।
গাজর
গাজরে আছে প্রচুর ভিটামিন এ বা বিটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন এক কাপ কাঁচা গাজর আপনার ত্বককে আলাদা এক উজ্জ্বলতা দেবে এবং সূর্যালোকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাবে। ত্বকের রঙে লালচে আভা এনে দেবে এই গাজর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে ত্বকের জন্য এসব ফলমূল বা সবজির উপকার পেতে এগুলো কাঁচা খাওয়াই ভালো। এতে এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ও ভিটামিনের গুণাগুণ অটুট থাকে। আর যদি রান্না করতেই হয় তবে একটু ভাপ দিয়ে নিন। ওপরের খাবারগুলো ছাড়াও প্রতিদিন খানিকটা বাদাম, কাঁচা যে কোনো ফল, ক্যাপসিকাম এবং প্রচুর প্রচুর পানি—এই হলো ত্বকের তারুণ্যের রহস্য।
ত্বকের জন্য যে খাবারগুলো মন্দ
চিনি
রক্তে চিনি বা শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে গ্লাইকেশন প্রোডাক্ট তৈরি হয় দেহে, আর তা ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে বাধা দেয়। ফলে ত্বক তার টান টান সতেজতা হারাতে থাকে। ত্বক তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যেতে থাকে। তাই ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে হলে মিষ্টি কিন্তু খেতে হবে কম।
ভাজা-পোড়া
অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, যেমন ভাজা-পোড়া খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়। কেননা, এরা টক্সিন তৈরি করে, ত্বকে নীরব প্রদাহ সৃষ্টি করে। ফলে ত্বকের সুস্থতা ব্যাহত হয়।
ক্যাফেইন
চা খেলে কালো হয় গায়ের রং, আগের দিনে মুরব্বিরা এ কথা বলতেন। কথাটা পুরোপুরি সত্যি না হলেও একেবারে মিথ্যেও নয়। চা ও কফিতে যে ক্যাফেইন আছে তা শরীরকে দ্রুত পানিশূন্য করে, কর্টিসোল হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়, ঘুমের চক্রকে ব্যাহত করে। ফলে ত্বক ক্লান্ত ও বুড়োটে দেখায়। অ্যালকোহল তাই, এটি ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। রক্তনালির ওপর মন্দ প্রভাব ফেলে, চর্বি বাড়ায়। ফলে ত্বক অনুজ্জ্বল দেখায়। তাই চা-কফিতে পরিমিত হতে হবে।
 খনিজ লবণের উৎস হিসেবে বিভিন্ন খাবার

ক্যালসিয়াম
কাজ 
ফসফরাসের সহযোগিতায় শরীরের কাঠামো, হাঁড় ও দাঁত গঠন এবং তা মজবুত করে। প্রতিটি জীব কোষ গঠনে এর প্রয়োজন। রক্ত জমাট বাঁধার প্রয়োজনীয় উপাদান। হৃৎপিন্ডের সংকোচন, প্রসারণ এবং হৃৎপিন্ডে স্পন্দনে সাহায্য করে।
উৎস (আহারোপযোগী) ।
প্রাণিজ উৎস যেমন-ছোট চিংড়ি, ছোট মাছের কাঁটা, নরম হাঁড়, দুধ ও দুধজাত খাবার।
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-ডাল, ঢেঁড়স, সজনে এবং সবুজ শাক যেমন-কচু শাক, পালং শাক ইত্যাদি।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ ।
৪৫০ মিলিগ্রাম ( প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
৫০০-৬০০ মিলিগ্রাম ( শিশুর জন্য )
৬৫০ মিলিগ্রাম ( কিশোর-কিশোরীর জন্য )
১১০০ মিলিগ্রাম ( গর্ভবতীর জন্য )
১১০০ মিলিগ্রাম ( প্রসূতির জন্য )

ফসফরাস
কাজ 
ক্যালসিয়ামের সাথে মিলিত হয়ে হাঁড় ও দাঁতের তন্তু তৈরী এবং তা মজবুত করে। শর্করা এবং চর্বি বিপাকে সাহায্য করে শরীরে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে। কোষের নিউক্লিক এসিড ও সাইটোপ্লাজমের অপরিহার্য অংশ।
উৎস ( আহারোপযোগী ) ।
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, পনির।
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-বাদাম, ডাল এবং দানা জাতীয় খাদ্য দ্রব্য।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ ।
৮০০ মিলিগ্রাম

পটাশিয়াম
কাজ 
দেহ বিশেষ করে চর্বিহীন মাংসপেশী বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন। পেশীর স্বাভাবিক নড়াচড়া বজায় রাখে।
উৎস (আহারোপযোগী) ।
প্রাণিজ উৎস যেমন-চর্বিহীন মাংস এবং দুধ ( তবে কম বেশি প্রায় সব খাবারের মধ্যে পটাশিয়াম রয়েছে )।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ :
২.৫ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য)।

আয়রণ
কাজ 
রক্তের হিমেগ্লোবিনের হিম অংশ তৈরীর জন্য অপরিহার্য। অসংখ্য এনজাইমের অংশ হিসেবে অক্সিডেশন-রিডাকশন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন-ট্রান্সফার সিস্টেমের জন্যে লৌহের প্রয়োজন।
উৎস (আহারোপযোগী) 
প্রাণিজ উৎস যেমন-মাংস, কলিজা, ডিম, টেংরা মাছ, তাপসী মাছ, রুপাপাতিয়া মাছ বা এসব মাছের শুটকি।
উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন-কাঁচা আম, আমচুর, কাল কচু শাক, ফুল কপির পাতা, শালগম পাতা, ডাঁটা শাক এবং অন্যান্য শাক।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ :
০৯ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য )
১০ মিলিগ্রাম (ছোট ছেলে মেয়ের জন্য)
১৮ মিলিগ্রাম (কিশোরের জন্য)
২৪ মিলিগ্রাম (কিশোরীর জন্য)
২৮ মিলিগ্রাম (প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার জন্য)
৩৩ মিলিগ্রাম (গর্ভবতীর জন্য)

আয়োডিন
কাজ 
থাইরক্সিন নামক হরমোন তৈরীর জন্য অত্যাবশ্যকীয়। শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।
উৎস (আহারোপযোগী) 
প্রাণিজ উৎস যেমন-সামুদ্রিক মাছ (তাজা/শুটকি)।
প্রাকৃতিক উৎস যেমন-সামুদ্রিক আগাছা।
আয়োডিন মিশ্রিত খাবার লবণ।
মাথাপিছু দৈনিক প্রয়োজনীয় পরিমাণ :
১৫০ মাইক্রোগ্রাম

বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন নিয়ে আলোচনা বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন নিয়ে আলোচনা Reviewed by SGMoviesHD on September 04, 2018 Rating: 5

No comments:

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.